* ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্যই ডিজিটাল আইন অপরিহার্য : প্রধানমন্ত্রী।
রাষ্ট্রপ্রধানের বিচক্ষণতা ও দূরদর্শিতা
ক্লিন ইমেজের মানুষ পরশ-তাপস

আরিফুল হক নভেলঃ আগামী ১লা ফেব্রুয়ারি বহুল আকাঙ্খিত ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন। অনেক আশা-আকাঙ্খা নিয়ে অপেক্ষা করছে নগরবাসী, আসছে নির্বাচন নিয়ে মানুষের আগ্রহ বাড়ছে দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের জনগণ ৫ বছর কেঁদেছে সাঈদ খোকনের ব্যাপক অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা ও লুটেরাদের পৃষ্ঠপোষকতার কারণে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মালিকানাধীন ১১টি সুপার মার্কেটের ব্যবসায়ী দোকানী ও ক্রেতা সাধারণ নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। খোকন সাহেব মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর গুলিস্তানের প্রাণকেন্দ্র নগরভবন থেকে মাত্র কয়েকশ গজ দূরে অবস্থিত সুন্দরবন স্কয়ার মার্কেটটি নির্বাচিত কমিটির কর্মকর্তাদের হাত থেকে সাহাবুদ্দিন বাহিনী জবর-দখলে নেয়। দখলে গিয়ে প্রথমেই তারা মার্কেটের ৯ কোটি টাকা মূল্যের চলন্ত সিড়ি ও বৈদ্যুতিক জেনারেটর খুলে বিক্রি করে দেয়। তারপর তদস্থলে অবৈধ দোকানপাট তৈরী করে বিক্রি করে। এছাড়া সুন্দরবন মার্কেটের ফাঁকা খোলামেলা জায়গায় নিচ তলা থেকে ৪র্থ তলা পর্যন্ত প্রায় ২৫০টি দোকান নির্মাণ করে। এখানেই থেমে থাকেনি লুটেরারা।
মার্কেটের ৪র্থ তলার ছাদের উপরে পঁচা ইট-সুরকি ও রড দিয়ে ৫ম তলা উঠিয়ে অবৈধ দোকান তৈরী করে, যার প্রতিটি দোকান বিক্রি হয় ২৫ থেকে ৪০ লাখ টাকায়। দোকানগুলো বিক্রি করার সময় ঢাকা দক্ষিণ কর্পোরেশন থেকে বরাদ্দপত্র এনে দিবে বলে মিথ্যা প্রলোভনে ক্রেতা সাধারণকে ঠকিয়ে একটি মার্কেট থেকেই সাহাবুদ্দিন গং প্রায় শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়।
এ ব্যাপারে মেয়র সাঈদ খোকনের কাছে ধর্ণা দিয়েও ব্যবসায়ী মালিক সমিতি কোনো প্রতিকার পায়নি। তবে লোক দেখানো অভিযানে নেমে একদিন নিচ তলার ও তৃতীয় তলার মাত্র কয়েকটি অবৈধ দোকান বুলডোজার দিয়ে ভেঙ্গে ফেলা হয়। কিন্তু সাহাবুদ্দিন চক্র পরে সব ম্যানেজ করে ফেলে। ফলে অসংখ্য অবৈধ দোকানসহ ৫ম তলার পঁচা ইট-সুরকি ও রড দিয়ে তৈরী ছাদ ঝুঁকির মধ্যেই রয়ে যায়। যেকোনো মুহূর্তে ছাদ ভেঙ্গে ব্যাপক প্রাণহানী ঘটতে পারে। এই অবৈধ কাজগুলোর বিরুদ্ধে মার্কেট কমিটি বার বার অভিযোগ করেও কোন ফল পাওয়া যায়নি। অথচ এই মার্কেটটি তৈরীর সময় এর ভিত্তি মজবুত করে ১০ম তলা পর্যন্ত ফাউন্ডেশন করা হয়েছিল। এখন প্রশ্ন উঠেছে, পঁচা ইট-সুরকি ও রড দিয়ে তৈরী করা ছাদের উপর প্ল্যান মোতাবেক আরো ৫ম তলা নির্মাণ করা হলে তা হলে অবস্থাটি কি হবে? মার্কেটটি এখনো যুবলীগ নামধারী সাহাবুদ্দিনের দখলে আছে।
মজার ব্যাপার হচ্ছে, সাম্প্রতিককালের যুবলীগের এক নেতা এক কালের ফুটপাতের হকার ইউনিট যুবদলের কর্মী সাহাবুদ্দিন সাম্প্রতিককালের বহিস্কৃত দক্ষিণ যুবলীগের এক নেতার ছত্রছায়ায় গুলিস্তানে প্রথমে যুবলীগের গুলিস্তান ইউনিটের সভাপতি ও পরবর্তীতে ২০নং ওয়ার্ড যুবীগের সভাপতি পদটি বাগিয়ে নিয়ে তিনি নিজেকে পুরো গুলিস্তানের মালিক-মুক্তার বনে যায়। এই সাহাবুদ্দিনই চলতে-ফিরতে মেয়র খোকন সাহেবের ডান হাত বলে পরিচয় দিত। মেয়রের প্রভাব খাটিয়ে পরবর্তীতে আশেপাশের আরো ১০টি মার্কেটেও খবরদারী শুরু করে।
এভাবে বেশ কয়েকটি মার্কেট থেকে প্রায় ৪০০টি দোকান বখড়া হিসেবে আদায় করে যার মূল্য শত কোটি টাকা। মার্কেট খেকো অপর ব্যক্তির নাম দেলোয়ার হোসেন দেলু।
এই দেলু এক সময় নিউমার্কেট থানা সংলগ্ন বিশাল সরকারি জমিতে অবৈধভাবে মার্কেট তৈরী করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে এক পর্যায়ে গণপিটুনির শিকার হয়ে পালিয়ে এসে গুলিস্তানে আশ্রয় নেয়। এখানে এসে সিটি কর্পোরেশনের মালিকানাধীন নগর প্লাজা, সিটি প্লাজা ও জাকির সুপার মার্কেটসহ তিনটি মার্কেট তার কব্জায় নেয়। এই মার্কেটগুলোর সমস্ত খালি জায়গা ও লোক চলাচলের রাস্তাসহ সব ফাঁকা স্থানে সে কয়েকশত অবৈধ দোকান গড়ে তোলেন যার প্রতিটি দোকান ২০ থেকে ৬০ লক্ষ টাকা মূল্য বিক্রি করে দেলু হাতিয়ে নেয় মোটা অংকের টাকা।
জায়গার মালিক সিটি কর্পোরেশন, খবরদারী দিলুরন এই নিয়ে দৈনিক নওরোজে ধারাবাহিকভাবে লেখালেখি হয়েছিল। কিন্তু কুম্ভকর্ণের ঘুম ভাঙ্গেনি। সাম্প্রতিক-কালে ক্যাসিনো কান্ড, সন্ত্রাস ও দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে দেলোয়ার হোসেন দেলু গা ঢাকা দিলেও তার পক্ষের লোকজন আলোচ্য তিনটি মার্কেট থেকে এখনও অবৈধভাবে অর্থ আদায় করছেন।
দেলু শুধু তিনটি মার্কেটের নিচ তলা ও দোতলা খেয়েই ক্ষ্যান্ত হননি। এই মার্কেটগুলোর উপরে পর্যায়ক্রমে বহুতল ভবন তৈরী করে। সেগুলোও বিক্রি করে দিয়েছেন। এই মার্কেটে যারা দোকানদারী করেন এবং গুদাম ঘর হিসাবে ব্যবহার করেন। তাদের ঘরে বৈদ্যুতিক সাবমিটার লাগিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন।
মজার ব্যাপার হচ্ছে, বিদ্যুৎ ব্যবহার করলেও বিল, না করলেও নির্ধারিত অংকের বিল দিতে হয় দোকানদারদের। মার্কেট তিনটিতে চলছে এখন দেলুর শাসন। এভাবেই লুটপাট হয়েছে বঙ্গবাজার কমপ্লেক্স, যেখানে রয়েছে সিটি কর্পোরেশনের আরো চারটি মার্কেট। আদর্শ হকার্স, মহানগর হকার্স, গুলিস্তান হকার্স মার্কেট ও বঙ্গবাজার হকার্স মার্কেট সমন্বয়ে গঠিত আলোচ্য বঙ্গ কমপ্লেক্সে ক্ষতিগ্রস্ত দোকানীদের অযুহাতে বার বার বরাদ্দপত্র ইস্যু করে সিটি কর্পোরেশন দক্ষিণ মার্কেট খেকো লুটেরাদের লুটপাটের সুযোগ করে দেয়। কল্পিত ক্ষতিগ্রস্ত দোকানীদের নাম করে ৫ শতাধিক দোকানের নতুন বরাদ্দপত্র ইস্যু করা হলেও সব দোকানের বরাদ্দপত্র আলোচ্য সাহাবুদ্দিনসহ মাত্র পাঁচজনে ভাগাভাগি করে নেয়। খোকন সাহেবের আমলে দক্ষিণ সিটির দোকানপাট লুটপাটের পুরো কাহিনী লিখলে গা শিউরে উঠবে। আমরা পরবর্তীতে তা প্রকাশ করবো।
যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা শেখ ফজলুল হক মনির প্রতিষ্ঠিত দৈনিক বাংলার বাণী পত্রিকাটির সুখ্যাতি আজো মনে করিয়ে দেয়। সাংবাদিকতার এক নবদিগন্ত সূচনাকারী বাংলার বাণী প্রতিষ্ঠাতা মনি ভাইয়ের যোগ্য উত্তরসূরী শেখ ফজলে নূর সামশ পরশ ও ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। দুই ভাই-ই ক্লীন ইমেজের মানুষ।
জননেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এই দুই ভাইকে বেছে নিয়ে একজন সফল রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে তাঁর বিচক্ষণতা ও দূরদর্শিতার পরিচয় দিয়েছেন। যুবলীগের দুর্নাম গোচাতে তিনি যেমন বেছে নিয়েছেন পরশকে তেমনিভাবে দক্ষিণ সিটির দুর্নাম গোচাতে মনোনয়ন দিয়েছেন ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপসকে। এই দুজনের কাছে জনগণের প্রত্যাশা যুবদল থেকে আশা যুবলীগের হাইব্রীড সাহাবুদ্দিনদের ঝেটিয়ে বিদায় করুন।
দক্ষিণ সিটির অবৈধ মার্কেট দখলকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিয়ে এক কালের কর্পদকহীন বর্ণচোরারা কিভাবে হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হলেন। অবৈধভাবে অর্জিত এদের অর্থ-সম্পদ রাষ্ট্রের অনুকূলে নিয়ে আসা সময়ের দাবি।
দেশ এর সাম্প্রতিক
সম্পাদক- শামসুল হক দুররানী, প্রকাশক- আরিফুল হক নভেল।
ঠিকানা: ২ আর কে মিশন রোড, ঢাকা-১২০৩। ফোন: ০১৫৫২৩৬৭৫৮০, ০১৬৭৬৩৮১২০৮, ০১৯৭৪৬৫৫৬০০
© 1989 - 2021, The Daily Nawroj. All rights reserved